খুলনা, বাংলাদেশ | ২০শে আষাঢ়, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ | ৪ঠা জুলাই, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ

Breaking News

ইরানের যে হামলায় ইসরায়েলের ‘প্রযুক্তির মেরুদণ্ড’ ধ্বংস হয়ে গেছে

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় তেল আবিবের দক্ষিণে রিহবেত শহরে ইসরাইলের বিখ্যাত সামরিক সংশ্লিষ্ট গবেষণাগার ভাইসমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্স ‘পুরোপুরি ধ্বংস’ হয়ে গেছে।

ইরানের সরকারি টেলিভিশন চ্যানেল প্রেস টিভির এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সামরিক-শিল্প কমপ্লেক্সের সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত ইসরাইলি শাসনব্যবস্থার বৈজ্ঞানিক ও সামরিক গবেষণার মূল ভিত্তি হিসেবে গড়ে ওঠা এই প্রতিষ্ঠানটি এখন কার্যত অচল ও বিধ্বস্ত।

ইসরাইলি সংবাদমাধ্যমের তথ্য অনুসারে- ইরানের সুনির্দিষ্ট এই হামলাকে ‘ভুল করে আক্রমণ’ হিসেবে দেখা হচ্ছে না। বরং এর লক্ষ্য ছিল পদার্থবিদ্যা, বায়োটেকনোলজি ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাসহ সামরিক গবেষণার গুরুত্বপূর্ণ এই কেন্দ্রটিকে গুড়িয়ে দেওয়া।

ইসরাইলি টেলিভিশন চ্যানেল ১৩– কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ভাইসমান ইনস্টিটিউট অব সায়েন্সের প্রেসিডেন্ট আলোন চেন স্বীকার করেছেন যে, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র প্রকাণ্ড কমপ্লেক্সের গুরুত্বপূর্ণ ভবনগুলোয় অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে আঘাত করায় এর ব্যাপক ও অপূরণীয় ক্ষতি হয়েছে।

তিনি বলেন, ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ হয়েছে এবং আমাদের প্রাথমিক মূল্যায়ন ৩০০ মিলিয়ন ডলার থেকে অর্ধ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত ক্ষতির ইঙ্গিত দেয়।

ক্ষয়ক্ষতির ছবি প্রকাশে বিধিনিষেধ আরোপের বিষয়টি স্বীকার করে তিনি আরও বলেন, ইরান যাতে এসব স্থাপনায় আবারও আঘাত করতে না পারে সেজন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

চ্যানেল-১৩ বলছে- পরিস্থিতি এমন যে, ইসরাইলি বসতি স্থাপনকারীরা ইরানের সুনির্দিষ্ট হামলা, ব্যাপ্তি ও অনেক জায়গার ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে এখনো অবগত নন।

বিধিনিষেধ সত্ত্বেও যেসব ছবি ও ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়েছে, তাতে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরাইলের ভয়াবহ ক্ষয়ক্ষতির চিত্র ফুটে উঠেছে।

গত ১৫ জুন ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ইসরাইল অধিকৃত অঞ্চলে তৈরি করা ভাইসমান ইনস্টিটিউটের বড় ধরনের ক্ষতি হয়। কমপ্লেক্সটির একাধিক অংশকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়েছে।

একটি নবনির্মিত রাসায়নিক ও ভৌত বিজ্ঞান গবেষণাগার প্রায় পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে। এটি এ বছরই চালু হওয়ার কথা ছিল।

জীবন ও গণনামূলক বিজ্ঞানচর্চার জন্য নিবেদিত ভবনও মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। অন্তত একটি ল্যাবে আগুন লেগেছে। এই স্থাপনাটিতে ক্যানসার ও কোষ পুনরুৎপাদনের ওষুধসহ গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা প্রকল্প চলছিল।

সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে ‘কার্ডিয়াক রিজেনারেশন’ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক এলদাদ জাহরের। তার ২২ বছরের গবেষণার ফসল- হৃৎপিণ্ডের হাজারো টিস্যু, ডিএনএ ও আরএনএ, অ্যান্টিবডি ও ল্যাবে তৈরি ভাইরাসের নমুনাসহ সবই ধ্বংস হয়ে গেছে।

ইনস্টিটিউটজুড়ে ছড়িয়ে থাকা প্রায় ৪৫টি ল্যাব ধ্বংস হয়েছে এবং এতে প্রায় ৪০০–৫০০ গবেষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। ক্ষতিগ্রস্ত ল্যাবগুলোর মধ্যে জীবনবিজ্ঞান, অণুজীববিজ্ঞান ও স্নায়ুবিজ্ঞানের ল্যাবও ছিল, যেখানে অপরিবর্তনীয় টিস্যু স্লাইড ও সেল লাইন নষ্ট হয়েছে।

প্ল্যানেটারি সায়েন্সেস ভবন- যেখানে ভূ-রসায়ন ও অন্যান্য গবেষণা চলত, সরাসরি আঘাতে নয় বরং পার্শ্ববর্তী রসায়ন ভবনে আঘাত করা ক্ষেপণাস্ত্রের শকওয়েভে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।

প্রেস টিভি বলছে- ইরানি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাতে ইনস্টিটিউটের প্রায় ৯০ শতাংশ ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আর্থিক ক্ষতি হয়েছে আনুমানিক ৩০০–৫৭০ মিলিয়ন ডলার।

খুলনা গেজেট/এএজে




আরও সংবাদ

খুলনা গেজেটের app পেতে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।

© 2020 khulnagazette all rights reserved

Developed By: Khulna IT, 01711903692

Don`t copy text!